ফের মামলা আদালতে, টেটের ইন্টারভিউর দিনও ঘোষিত নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২২শে সেপ্টেম্বর— নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের একাংশের কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজুর দিনেই তড়িঘড়ি উচ্চ প্রাথমিকে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দিলো স্কুল সার্ভিস কমিশন। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিকে টেট ফলাফলের অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা বৃহস্পতিবার আপিল মামলা দায়ের করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে। সেই মামলা গ্রহণও করেছে সিঙ্গল বেঞ্চ। নতুন এই মামলার রায়ের আগেই এদিন তড়িঘড়ি স্কুল সার্ভিস কমিশন উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলো।
গত ১৪ই সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের টেটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। সেদিনও একই ঘটনা ঘটে। হাইকোর্টের নির্দেশের দুই ঘন্টার মধ্যেই প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের টেটের ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পর সামনে চলে আসে একাধিক অস্বচ্ছতা। প্রাথমিকস্তরে কত শূন্যপদ তা জানানো হয়নি। প্রাথমিক টেটের উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে কতজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং কতজনের প্রশিক্ষণ নেই, তা সরকার গোপন করেছে। প্রাথমিকে উত্তীর্ণদের সংখ্যা জানানো হলেও, উচ্চ প্রাথমিক টেটে কতজন উত্তীর্ণ হয়েছেন, তা এখনও অজানা। ফল প্রকাশ করা হয়েছে, অথচ শূন্যপদ, উত্তীর্ণের সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশ না করায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে নিয়োগের স্থগিতাদেশ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সি এস কারনানের কাছে আপিল মামলা করেছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা।
পাশাপাশি, উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন প্রার্থীরা। এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েব সাইটে ইন্টারভিউ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে, ২৩শে সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার পর www.westbengalssc.com এই ওয়েবসাইটে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত এই আবেদন করা যাবে। সম্ভাব্য ১৪হাজার ৮৮টি শূন্যপদের জন্য উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউতে ডাকা হচ্ছে। ২০১১সাল ও ২০১৫সালে টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা, প্রশিক্ষণহীন উভয়ই ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। টেটের জন্য ইতিমধ্যে প্রার্থীদের কাছ থেকে ২৫০টাকা নিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদনকারীদের আবারও ২৫০টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে এস এস সি’র করা বিজ্ঞপ্তিতে।
এস এস সি’র জারি করা এই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে আবেদন করবেন কিনা, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। যদিও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এদিনের কলকাতা হাইকোর্টের আপিল মামলার দ্রুত শুনানি হওয়ার কথা। মামলাকারীদের বক্তব্য, সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি সি এস কারনানের নির্দেশের পরই টেটের ফল প্রকাশ হয় এবং সেই ফলে অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে বিচারপতিকে জানানো হয়েছিল। এই কথা শোনার পর বিচারপতি কারনান রাজ্য সরকারের কাছ থেকে টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে কতজনের প্রশিক্ষণ রয়েছে, কতজনের নেই, তার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিল। সেই তালিকা জমা দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। যুক্তি হিসেবে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিচারপতিকে বলেছিলেন, ইন্টারভিউ না হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণহীনদের আলাদা করে তালিকা দেওয়া সম্ভব নয় এবং সেই তালিকা জমা দিতে সময় লাগবে।
টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রশিক্ষণহীন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের আলাদা করে তালিকা তৈরি করা সরকারের কাছে কেন অসম্ভব হবে? এ প্রশ্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের। টেটের ফর্ম ফিলাপের সময় আবেদনকারীরা তো নির্দিষ্ট করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিনা, তা উল্লেখ করেছেন। তাহলে কোর্টে তালিকা দিতে সরকারের এত দ্বিধা কেন? তালিকা দিতে সরকারের চাওয়া সময়ের অপেক্ষা না করে টেট নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে এদিন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল মামলা করেছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা।
ajker ganashakti
ReplyDeleteফের মামলা আদালতে, টেটের
ইন্টারভিউর দিনও ঘোষিত
নিজস্ব প্রতিনিধি
কলকাতা, ২২শে সেপ্টেম্বর— নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের একাংশের কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজুর দিনেই তড়িঘড়ি উচ্চ প্রাথমিকে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দিলো স্কুল সার্ভিস কমিশন। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিকে টেট ফলাফলের অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা বৃহস্পতিবার আপিল মামলা দায়ের করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে। সেই মামলা গ্রহণও করেছে সিঙ্গল বেঞ্চ। নতুন এই মামলার রায়ের আগেই এদিন তড়িঘড়ি স্কুল সার্ভিস কমিশন উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলো।
গত ১৪ই সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের টেটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। সেদিনও একই ঘটনা ঘটে। হাইকোর্টের নির্দেশের দুই ঘন্টার মধ্যেই প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের টেটের ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পর সামনে চলে আসে একাধিক অস্বচ্ছতা। প্রাথমিকস্তরে কত শূন্যপদ তা জানানো হয়নি। প্রাথমিক টেটের উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে কতজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং কতজনের প্রশিক্ষণ নেই, তা সরকার গোপন করেছে। প্রাথমিকে উত্তীর্ণদের সংখ্যা জানানো হলেও, উচ্চ প্রাথমিক টেটে কতজন উত্তীর্ণ হয়েছেন, তা এখনও অজানা। ফল প্রকাশ করা হয়েছে, অথচ শূন্যপদ, উত্তীর্ণের সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশ না করায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে নিয়োগের স্থগিতাদেশ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সি এস কারনানের কাছে আপিল মামলা করেছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা।
পাশাপাশি, উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদন করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন প্রার্থীরা। এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েব সাইটে ইন্টারভিউ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে, ২৩শে সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার পর www.westbengalssc.com এই ওয়েবসাইটে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত এই আবেদন করা যাবে। সম্ভাব্য ১৪হাজার ৮৮টি শূন্যপদের জন্য উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউতে ডাকা হচ্ছে। ২০১১সাল ও ২০১৫সালে টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা, প্রশিক্ষণহীন উভয়ই ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। টেটের জন্য ইতিমধ্যে প্রার্থীদের কাছ থেকে ২৫০টাকা নিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদনকারীদের আবারও ২৫০টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে এস এস সি’র করা বিজ্ঞপ্তিতে।
এস এস সি’র জারি করা এই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে আবেদন করবেন কিনা, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। যদিও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এদিনের কলকাতা হাইকোর্টের আপিল মামলার দ্রুত শুনানি হওয়ার কথা। মামলাকারীদের বক্তব্য, সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি সি এস কারনানের নির্দেশের পরই টেটের ফল প্রকাশ হয় এবং সেই ফলে অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে বিচারপতিকে জানানো হয়েছিল। এই কথা শোনার পর বিচারপতি কারনান রাজ্য সরকারের কাছ থেকে টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে কতজনের প্রশিক্ষণ রয়েছে, কতজনের নেই, তার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিল। সেই তালিকা জমা দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। যুক্তি হিসেবে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিচারপতিকে বলেছিলেন, ইন্টারভিউ না হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণহীনদের আলাদা করে তালিকা দেওয়া সম্ভব নয় এবং সেই তালিকা জমা দিতে সময় লাগবে।
টেট উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রশিক্ষণহীন এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের আলাদা করে তালিকা তৈরি করা সরকারের কাছে কেন অসম্ভব হবে? এ প্রশ্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের। টেটের ফর্ম ফিলাপের সময় আবেদনকারীরা তো নির্দিষ্ট করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিনা, তা উল্লেখ করেছেন। তাহলে কোর্টে তালিকা দিতে সরকারের এত দ্বিধা কেন? তালিকা দিতে সরকারের চাওয়া সময়ের অপেক্ষা না করে টেট নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে এদিন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল মামলা করেছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা।